আদিবাসী গ্রামে সুপেয় পানির সংকট নিরসনে দ্রুত উদ্যোগ নিন
- আপলোড সময় : ১৯-০৯-২০২৫ ০২:১০:৩৬ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ১৯-০৯-২০২৫ ০২:১০:৩৬ পূর্বাহ্ন

তাহিরপুর সীমান্তবর্তী পাহাড়ি অঞ্চলের গারো, হাজং ও খাসিয়া সম্প্রদায়ের মানুষজন সুপেয় পানির সংকটে ভুগছেন। প্রাকৃতিক ঝর্ণা ও ছড়া এ অঞ্চলের একমাত্র পানির উৎস হলেও তা এখন পর্যটকদের অবাধ বিচরণে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। এ বাস্তবতায় স্থানীয় আদিবাসী জনগোষ্ঠী শুধু পানির সংকটেই নয়, বরং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যেও পড়ছে।
ঝর্ণার পানি দিয়ে স্থানীয়রা প্রতিদিনের খাবার, গোসল ও গৃহস্থালি কাজ স¤পন্ন করেন। কিন্তু পর্যটকদের অবাধ বিচরণ, পানির অপচয় ও নোংরা করার কারণে ঝর্ণার পানি ব্যবহারের উপযোগিতা হারাচ্ছে। নারীরা গোসল বা ধোয়ামোছার মতো দৈনন্দিন কাজে যেতে গিয়ে গোপনীয়তা হারাচ্ছেন। পর্যটকদের ছবি ও ভিডিও ধারণ সামাজিক নিরাপত্তাহীনতার জন্ম দিচ্ছে। এর ফলে আদিবাসী কিশোরী থেকে নারী পর্যন্ত সবাইকে বিব্রতকর ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হতে হচ্ছে।
এ সমস্যার গভীরতর দিক হলো, এটি কেবল পানি সংকট নয়, বরং আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক টিকে থাকা ও মর্যাদার প্রশ্ন। শুকনো মৌসুমে পানির সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। বারবার আবেদন করার পরও এখনো স্থায়ী সমাধান না পাওয়া রাষ্ট্রীয় দায়িত্বহীনতারই বহিঃপ্রকাশ। পাহাড়ি অঞ্চলে টেকসই নলকূপ বসানো কিংবা পাইপলাইনের মাধ্যমে নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করা সরকারের পক্ষে অসম্ভব নয়।
আমরা মনে করি, দ্রুত তিনটি বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি- প্রথমত, সীমান্তবর্তী আদিবাসী গ্রামগুলোতে সরকারিভাবে সুপেয় পানির স্থায়ী ব্যবস্থা করতে হবে। দ্বিতীয়ত, পর্যটকদের জন্য কঠোর আচরণবিধি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন জরুরি। প্রাকৃতিক ঝর্ণা যে শুধু বিনোদনের স্থান নয়, স্থানীয়দের জীবনরেখা - এ বিষয়টি সবাইকে বোঝাতে হবে। তৃতীয়ত, আদিবাসী সম্প্রদায়ের সাংস্কৃতিক মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনিক নজরদারি বাড়ানো আবশ্যক।
মনে রাখা জরুরি, পর্যটন বিকাশ মানেই স্থানীয় জনগোষ্ঠীর দুর্ভোগ নয়। বরং পর্যটন হবে এমন এক শক্তি, যা স্থানীয় মানুষের জীবনমান উন্নয়নে
অবদান রাখবে। তাই এখনই কার্যকর উদ্যোগ নিয়ে আদিবাসীদের সুপেয় পানির সংকট ও সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা দূর করতে হবে। দেরি মানেই সংকটকে আরও ভয়াবহ করে তোলা।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ